সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৬ ১৪৩১ ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
নওগাঁ দর্পণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২
রংপুরে অস্বাভাবিকহারে বৃষ্টি কমে যাওয়া, নদী-জলাধারসহ পানির বিভিন্ন উৎসগুলোর পরিচর্চা না থাকায় কৃষিতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের।
ফলে কৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নানা ধরনের সেচযন্ত্র। যার ৯০ শতাংশই ডিজেল ও বিদ্যুৎ নির্ভর। তবে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে কৃষকের। কৃষিতে খরচ কমাতে সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচ ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। বোরো সেচ নির্ভর হলেও এবার আমনেও জমি তৈরি থেকে শুরু করে রোপণ পুরোটাই করতে হয়েছে সেচের মাধ্যমে।
বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টি না থাকায় ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হয়েছেন কৃষক। আর এতেই বেড়েছে উৎপাদন খরচ। চলতি আমন মৌসুমে শুধু সেচেই উত্তরাঞ্চলে কৃষকদের বাড়তি খরচ ২০০ কোটি টাকারও বেশি। বর্তমানে এ অঞ্চলে কৃষি কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে প্রায় ১৬ লাখ ডিজেল চালিত সেচ পাম্প। এতে প্রায় ১০ লাখ টন ডিজেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে শুধু ধান চাষে সাড়ে তিন লাখ বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে ৫৫ লাখ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। যেখানে বিদ্যু খরচ হয় ২হাজার থেকে ২২০০ মেগাওয়াট। সংকট মোকাবিলায় বেড়েছে ডিজেলের দাম। জ্বালানি সাশ্রয়ে চলছে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং। এতে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। এই বাস্তবতায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ ব্যবস্থায়।
জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানী ইউনিয়নের সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন সেচ সুবিধায় পাওয়ায় এখানকার আমন ধানের জমিগুলো হয়েছে সবুজে সমারোহ। গত ৭ বছর ধরে এই ইউনিয়টিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের গড়ে উঠেছে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ প্রকল্প। একেকটি সৌর প্যানেল থেকে সেচ দেয়া হচ্ছে ১০০ বিঘা জমিতে। কৃষকরা জানান, এই ব্যবস্থায় সেচের জন্য তাদেরকে বিদ্যুৎ কিংবা ডিজেলের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয় না। ফলে সেচ দেয় যার যার প্রয়োজন মতো ।
কৃষক রহমত আলী জানান, সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে গত ৫ বছর থেকে আমি আমার জমিতে সেচ দিচ্ছি। যখন জমিতে পানির দরকার হয় তখনেই পানি দিচ্ছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র স্থাপনে কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। আমরা যদি সারা দেশে সোলার প্লান স্থাপন করতে পারি তা হলে আমরা সেচ খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে পারবো। কৃষি অর্থনীতি গতিশীল এবং জ্বালানির ব্যবহার কমাতে ২০১০ সালে সরকার সারাদেশে ৫০ হাজার সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়