শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৪ ১৪৩১ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪
বাংলাদেশি গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগি ‘বাউ চিকেন’ সাড়া ফেলেছে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায়। খেতে দেশি মুরগির মতোই স্বাদ হওয়ায় বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা। গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক খামারও। নতুন জাতের এই মুরগি পালন করে বাজিমাত করেছেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার প্রান্তিক খামারি ফেরদৌসী, রিমা, রেনুকা, শামিমা, রোকেয়া বেগমের মতো অনেকেই। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন অনেকেই।
দেশি মুরগির দাম খুবই চড়া। অনেকেটা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কয়েক বছর আগে ‘বাউ চিকেন’ নামে নতুন একটি মুরগির জাত উদ্ভাবন করেন। এ মুরগির মাংসের স্বাদ অনেকটা দেশি মুরগির মতোই। দেশীয় জলবায়ুর সঙ্গে মানানসই বাউ চিকেন পালন করে সাড়া ফেলেছেন বদলগাছি উপজেলার কোমারপুর গ্রামের খামারি রেনুকা বেগম। চাহিদা বেশি থাকায় তার ব্যবসায় মুনাফাও হচ্ছে বেশ।
বাউ চিকেন খামারি রেনুকা বেগম বলেন, ৪৫ দিনে এই মুরগি ৯০০ থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজন হয়। লাভও বেশি, দেশি মুরগির স্বাদ আর এই বাউ মুরগির স্বাদ একই রকম।
রেনুকা বেগম জানান, বয়লার, সোনালি কিংবা পাকিস্তানি জাতের চেয়ে এই মুরগিতে রোগবালাই কম। ওষুধ তেমন একটা লাগে না, রোগবালাই দেশি মুরগির মতোই। তাদের এলাকার আরও প্রায় ১৫ খামারিরা ইতোমধ্যে বাউ চিকেনের খামার গড়ে তুলেছেন।
এলাকাবাসী আলতাফ হোসেন জানান, এই জাতের মুরগি পুষে আমরা লাভবান হয়েছি। সরকারের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাউ চিকেন পালনে খামারিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও।
মৌসুমির প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুর হোসেন বলেন, ‘ব্রাউ ব্রো বা বাউ মুরগি পালন করে আমার উপজেলায় অনেকই লাভের মুখ দেখেছে। ব্রয়লার মুরগি অনেকের কাছেই অপছন্দের, সেখানে বাউ মুরগি তাদের কাছে খুবই পছন্দের মুরগি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। খেতেও দেশি মুরগির মতো স্বাদ। আমি নিজেও অনেক খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগিতে রোগবালাই খুবই কম হয়ে থাকে। উন্নত এ মুরগির জাতকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাব।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তালেব বলেন, ‘বাউ ব্রো জাতের মুরগি খেতে সুস্বাদু, মৃত্যুহার কম, উৎপাদন বেশি হওয়ারর কারণেই খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও অনেক। আমরা চাই এ মুরগি যেন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।’
এই ক্ষেত্রে স্থানীয় এনজিও মৌসুমি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করছে। দেশি মুরগির চেয়ে বাউ চিকেনের দাম কিছুটা কম। নতুন জাতের এ মুরগি জেলার মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়