শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ বৈশাখ ২০ ১৪৩১ ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪
নওগাঁর বদলগাছীসহ জেলার সব এলাকাতেই গো-খাদ্য উন্নত প্রজাতির ঘাস চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা গরু ছাগল লালন-পালন করেন তাদের মধ্যে অনেক কৃষকই ৫/১০ কাঠা জমিতে ঘাস চাষ করেছে আবার অনেক কৃষক নিজের চাহিদা মিটিয়ে ঘাস স্থানীয় হাটে বাজারে বিক্রি করেন। এক আঁটি ঘাস বিক্রি হয় ৩০/৪০ টাকায়। শুধু ঘাস চাষ করে নিজের ভাগ্য বদল করেছেন একজন সফল ঘাস চাষি উপজেলার মিঠাপুর এলাকার ইউনুছ বয়াতী।
মিঠাপুর এলাকায় এ প্রতিবেদককে দেখতে পেয়ে ইউনুছ বয়াতী বলেন, ‘আমি তো কৃষি কাজে অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখি। আমাকে নিয়ে কিছু লেখেন না কেন? তার সাথে যে ভ্যানটি ছিল তাতে কয়েক আঁটি ঘাস ছিল। প্রতিবেদক জানতে চাইলেন, ‘কি করেন আপনি?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি একজন বয়াতী, গান করি এবং একজন সফল ঘাস চাষি। বিক্রি করি হোম ডেলিভারি দিয়ে।
দেখতে গেলাম তাঁর ঘাস ক্ষেত। মিঠাপুর পুরাতন বাজারের ইটভাটার পাশেই তাঁর ঘাস ক্ষেত। উঁচু নিচু জমি মিলে সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে তিনি ঘাস চাষ করেছেন। শীতকালীন ও গীষ্মকালীন চাষের ভিন্ন ভিন্ন জাত রয়েছে।
এর মধ্যে জারা-১, নেপিয়ার ঘাস, পাংচুন ঘাসসহ নানা প্রজাতির ঘাস তিনি চাষ করেছেন। এর মধ্যে বিবি ওয়ান জাত ঘাস গরমে ফলন ভালো হয়। পাংচুন ও নেপিয়ার হয় শীতে। প্রতিদিন ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘাস বিক্রি করেন তিনি। আবার কোনো ঘাস ব্যবসায়ীরা এসে পাইকারি কিনে নিয়ে যায়।
তথ্য সংগ্রহকালে সেখানে উপস্থিত কৃষক হাফিজার জানান, বয়াতী একজন সফল ঘাস চাষি। তিনি ঘাস চাষ করে অনেক লাভবান। ঘাস ছাড়া তিনি অন্য কোনো ফসল করেন না। আমার জমিটাও তাঁর কাছে লিজ দেওয়া ছিল খুলে নিয়েছি।
উজালপুর গ্রামের সুইট জানান, তাঁর ৪টি গাভী আছে। প্রতিদিন ঘাস লাগে ২০ আঁটি। বেশি করে ঘাস নেন জন্য দাম দেন ২০ টাকা আঁটি। সপ্তাহে অথবা মাসে মূল্য পরিশোধ করি। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় আমরা উপকৃত হয়।
ঘাস চাষি ইউনুছ বয়াতী খাদাইল ব্রামন পুখুরিয়া গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের জমি সোয়া বিঘা, ৫ বিঘার কিছু বেশি জমি লিজ নিয়ে মোট সাড়ে ৬ বিঘা জমি ঘাস চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় ঘাস চাষে বেশি লাভ। বছরে ৩বার জমিতে ফসল ফেলানো হয় আর একই জমি থেকে বছরে ৬ বার ঘাস কাটা হয়। এক বিঘা জমিতে একবার ঘাস কাটলে ৪০/৪২ হাজার টাকা ঘাস বিক্রি হয়। আমি জমি লিজ নিয়েছি বছরে ২০/২২ হাজা টাকা বিঘা দরে।’
বয়াতী আরো বলেন, ‘আশপাশে বিভিন্ন গ্রামে ৬০/৭০টি পরিবার রয়েছে। তাদের বাড়ি বাড়ি ঘাস পৌঁছে দিতে হয়। এক আঁটি ঘাস ৩০/৪০ টাকা বিক্রি হয় তবে কেউ বেশি পরিমাণ কিনলে তখন কিছুটা দাম কমে দেয়। এ ছাড়া হাটে বাজারেও বিক্রি করা হয়। ঘাস চাষে আমি বেশি লাভবান তাই অন্য কোনো ফসল করি না।’
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক বলেন, ‘গো-ছাগলের উন্নত খাবার ঘাস। ঘাসে ভিটামিন হরমন বেশি। ঘাস খাওয়ালে গাভী সময় মতো বাচ্চা ও পরিমাণ মতো দুধ দিবে। তাই সব সময় খামারিদের ফাঁকা জায়গা জমিতে ঘাস চাষে পরামর্শ দিচ্ছি। আমি ইউনুছ বয়াতীর ঘাস ক্ষেত দেখতে যাব।’
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়