বুধবার ০৮ মে ২০২৪ বৈশাখ ২৪ ১৪৩১ ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২১
নওগাঁয় চলতি বোরো মৌসুমে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ ফলন হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে কেহই বোরো ধানের এমন বাম্পার ফলন পায়নি। তবে বাজারে ধানের মূল্য কমের কারণে দিশেহারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা।
উত্তরবঙ্গের শস্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁয় সেন্ডিকেট চক্র সক্রিয় থাকায় চলতি বোরো ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার হাজার হাজার কৃষক। ধানের আড়ৎদার, চাতাল ব্যবসায়ী, মিল ব্যবসায়ী ও মাঠ পর্যায়ের ধান ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে হঠাৎ করেই গত সপ্তাহ থেকে প্রকার ভেদে প্রতিমণে ১৫০ থেকে ২ শত টাকা ধানের দাম কমে যাওয়ার কারণে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
এক সপ্তাহ আগে যে ধান প্রকার ভেদে ৯৫০ থেকে ১০৫০/১০৭০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়েছে সেই ধান মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৮শ টাকা, এমনকি ৭৮০ টাকা মূল্যেও বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাশিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, আমার লম্বা জিরা ধান প্রথমে ৯৫০ টাকা মণ কিনতে চাইলেও পরের দিন সেই ধান প্রতিমণ ৯শ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বিক্রির একদিন পর আমার বড় ভাই আমজাদ একই ধান বিক্রি করতে গেলে ধান ব্যবসায়ীরা প্রথমে ৭৮০ পরে ৮ শ টাকা প্রতিমণ দাম করেন- যার কারণে ধান বিক্রি না করে ঘরে তুলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন।
একই গ্রামের কৃষক সাজ্জাদ হোসেন মন্ডল, মোজাহারুলসহ এলাকার অনেক কৃষক জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের চাষকৃত ধান কাটা-মাড়াই শেষে বিক্রি করতে গিয়ে প্রথমে একটু ভালো দাম পেলেও ইদকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে প্রতি মণে ১৫০ থেকে ২শ টাকা কমে কেনাবেচা হচ্ছে।
এমনও অভিযোগ রয়েছে, আকাশে মেঘ দেখা দিলে বা বৃষ্টি হলেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান বাঁকিতে বিক্রি করতেও বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। আর ধান সিন্ডিকেটের সদস্যরা এমন ভাবেই কৃষকদের বেকায়দায় ফেলে তুলনামূলক অনেক কম মূল্যে ধান কিনে মজুদ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি সিন্ডিকেটের হয়ে বিভিন্ন এলাকার ধনী কৃষকরাও কম মূল্যে ধান কিনে মজুদ করছেন বলেও অভিযোগ। মজুদকৃত ধান ইদের পর বেশিমূল্যে বিক্রি করে লাভমান হবেন ব্যবসায়ী ও ধনী কৃষকরা। অপরদিকে লোকসানের মুখে পড়ছেন মাঠ পর্যায়ের মধ্যবিত্ত কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুল ওয়াদুদ জানান, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৮০ হাজার ৬২৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিগত রোপা আমনে ধানের ভালো দাম পাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত আরও সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে এবং চলতি বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
তবে কাটা ও মাড়াইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে বাজারে তুলনামূলক ধানের মূল্য কিছুটা কমে যাওয়ার কারনে বিশেষ করে মধ্যবিত্ত কৃষকরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়