বুধবার ০৮ মে ২০২৪ বৈশাখ ২৪ ১৪৩১ ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ধানের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমণে দাম কমেছে ৪০-৫০ টাকা। ধানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে চাষিদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৯ লাখ ৭ হাজার ৫২৫ টন ধান উৎপাদন হয়। বেশ কিছুদিন আগে জেলায় আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। প্রান্তিক কৃষকরা ধান বিক্রি করে ইরি-বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। ক্ষুদ্র কৃষকদের ঘরে এখন ধান নেই বললেই চলে। তবে বড় কৃষকদের ঘরে ধান রয়েছে। এ কারণে হাটে ধান সরবরাহও কমেছে।
এক মাস আগে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চকগৌরি হাটে ২৫-৩০ লাখ টাকার ধান বেচাকেনা হয়েছিল। ধানের সরবরাহ কমে আসায় এখন ৬-৮ লাখ টাকার ধান কেনাবেচা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগেও প্রতি মণ ধানে দাম বেশি ছিল ৪০-৫০ টাকা। রোববার এ হাটে স্বর্ণা-৫ ধান বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকা থেকে ১২১০ টাকা, ব্রিআর-৪৯ ধান ১২৪০ টাকা থেকে ১২৬০ টাকা। সবচেয়ে বেশি কমেছে সুগন্ধি আতব ধানের দাম। সুগন্ধি আতব ধান মণে ২০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২২৫০ টাকা দরে।
গত এক মাসে জেলায় মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করায় কয়েক দফা ধানের দাম ওঠানামা করে। এ কারণে হাটে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা কমেছে।
এদিকে, নওগাঁ শহরের পৌর খুচরা চাল বাজারে প্রতিকেজি চালে দাম কমেছে ২ টাকা। স্বর্না ৫ জাতের চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রিআর ২৮ ও ৪৯ চাল ৫২-৫৪ টাকা, জিরাশাইল ৬০-৬২ টাকা এবং কাটারি ৬৬-৬৮ টাকা দাম।
মহাদেবপুর উপজেলার গনেশপুর গ্রামের কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, আমন মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছিলাম। প্রতি বিঘাতে ফলন হয়েছে ১৫-১৬ মণ। পোকার আক্রমণ হওয়ায় ফলন কিছুটা কমেছে। তবে কীটনাশক, সার ও শ্রমিক খরচ বাড়ায় ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় প্রায় ২০ কিলোমিটার দূর থেকে এ হাটে ধান বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসা হয়। প্রতি মণে ভাড়া পড়েছে ২৫ টাকা করে। হাটে এসে দেখি ধানের দাম কমে গেছে। প্রতিমণ ধান বিক্রি করতে হয়েছে ১২৬০ টাকা মণ। যা গত হাটে ছিল ১৩১০ টাকা। দাম কমে যাওয়ায় হতাশ।
হরশি গ্রামের আরেক কৃষক জয়নাল হোসেন হাটে ১০ মণ আতব ধান বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, হাটে ধান বিক্রি করতে এসে মনটা খারাপ হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা দাম বলছে ২২০০ টাকা। অবশেষে ২২৫০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। যা কিছুদিন আগেও ছিল মণে ২০০ টাকা বেশি।
ধান ব্যবসায়ী সুইট হোসেন বলেন, মজুতবিরোধী অভিযানের পর থেকে হাটে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা কমেছে। এ কারণে ধানের দাম কমেছে প্রতিমণে ৪০-৫০ টাকা। ধানের প্রয়োজন আছে ব্যবসায়ীরা ভয়ে কিনতে আগ্রহী না। বেশি ধান কিনলে পরে হয়ত জরিমানা গুনতে হবে, এ কারণে ব্যবসায়ীরা ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছে।
জানা যায়, নওগাঁয় গত এক মাসে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪১টি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ২৩ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়