শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর ২০১৯
মাত্র তিন জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এছাড়াও কমপ্লেক্সটির নতুন ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভবন পুরোপুরি চালু না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসকের এতটাই সংকট যে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এলে রোগী দেখেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও। অবশ্য তিনি নিজেও মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক।
জানা যায়, উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র তিন জন মেডিক্যাল কর্মকর্তা। ফাঁকা রয়েছে একটি করে বিশেষজ্ঞ, সার্জন, গাইনি ও মেডিসিন চিকিৎসকের পদ। তিন জন পরিচ্ছন্ন কর্মীর স্থানে রয়েছে মাত্র একজন।
এছাড়াও আশির দশকে নির্মাণ করা আবাসিক ভবনগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। ইতোমধ্যেই ডরমেটরি বন্ধ হওয়াসহ পাঁচটি আবাসিক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে নতুন ভবন নির্মাণ করে কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার উন্নীত করা হলেও তা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি কমেনি। চাহিদা মতো শয্যা না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
করজগ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পেট ব্যথা নিয়ে একঘণ্টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনও ডাক্তার দেখাতে পাইনি। আরও কতো সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বুঝতে পারছি না।’
সীম্বা গ্রামের মরিয়ম বেগম বলেন, ‘এখানে ডাক্তার কম থাকায় চিকিৎসা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় কয়েক ঘণ্টা দাঁড়ানোর পর ডাক্তার দেখানো যায়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এইচ এম ইফতেখারুল আলম খান বলেন, ‘এখানে আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় চারশ’ মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। চিকিৎসক সংকট থাকার কারণে বাধ্য হয়ে আমি নিজেও রোগী দেখি। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এছাড়াও অন্যান্য সংকট ও সমস্যা তো রয়েছেই।’
তার চিকিৎসক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. কে এইচ এম ইফতেখারুল আলম খান জানান, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাস করার পর বিসিএস দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে যোগ দেন। ফলে পেশাদার না হলেও তিনি পাস করা চিকিৎসক। তবে রোগী দেখার কাজটি তিনি স্বেচ্ছায় করেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট থাকায় তিনি সেখানে গেলে রোগীদের সাহায্য করতেই তিনি তাদের দেখে ব্যবস্থাপত্র দেন।
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, ‘হাসপাতালটির অবস্থা বর্তমানে আগের থেকে উন্নতির দিকে। আমি এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, জনবলসহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করে দ্রুত ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। এছাড়াও এই হাসপাতাল থেকে উপজেলার মানুষরা যাতে আধুনিক মানের সেবা পায়, সেই ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। আশা করি দ্রুত এই কার্যক্রমগুলো এখানে চালু করা হবে।’
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়