শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
বরেন্দ্র অঞ্চলের খাদ্যগোলা বলে খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিনা খরচে পোকা দমনের পরিবেশ বান্ধব পার্চিং পদ্ধতি। ক্ষতিকর পোকা দমনে এক সময় জমিতে ব্যাপকভাবে কীটনাশক ব্যবহার করা হতো। এখন সে প্রবণতা কমেছে।
ধান খেতে পোকা খেকো পাখি বসার ব্যবস্থা করে পোকা দমন করা হচ্ছে। উপজেলার ধান খেতের মাঝে ১৫-২০ হাত দূরে দূরে বিভিন্ন গাছের ডাল, বাঁশের খুঁটি, বাঁশের কঞ্চি পুঁতে পাখি বসার পরিবেশ করে পোকা দমন করছেন কৃষকরা। সেখানে কিছুক্ষণ পরপর উড়ে এসে বসছে আর খেতের পোকা ধরে খাচ্ছে নানা জাতের পাখি। এভাবে কীটনাশক ছাড়া সহজেই দমন হচ্ছে পোকা।
জানা যায়, পোকা দমনের পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতির নাম পার্চিং পদ্ধতি। পার্চিং ইংরেজী শব্দ। পাখি বসে এমন উঁচু ডাল বা খুঁটির নাম পার্চ। আর পার্চ থেকে পাচিং নামের উদ্ভব। ফসলের জমিতে ধৈঞ্চা গাছ, ডাল, কঞ্চি, বাশের খুঁটি এগুলো পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে পাখি ক্ষতিকারক পোকা মথ, বাচ্চা, ডিম খেয়ে পোকা দমন করে। ফসলের পোকা দমনের এই পদ্ধতিতে অত্যন্ত কমব্যয় এবং পরিবেশবান্ধব। পার্চিং পদ্ধতি দুই প্রকার- ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং এবং ধৈঞ্চা, কলা গাছ ইত্যাদি জীবন্ত পুঁতে দিলে তা হবে লাইভ পার্চিং। কীটনাশক ছাড়াই পোকা দমনের এই পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
উপজেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকা দমন করছেন কৃষকরা। এতে ফসলের জমিতে কীটনাশক ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে। পাশাপাশি কৃষকেরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করায় পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
উপজেলাপর মহাদেবপুর সদর, এনায়েতপুর, উত্তরগ্রাম, খাজুর, হাতুড়, চান্দাশ, সফাপুর, ভিমপুর, রাইগাঁ ও চেরাগপুর ইউপির বিভিন্ন এলাকার ধান খেতে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার দেখা গেছে। জমিতে পুঁতে দেয়া গাছের ডাল ও বাঁশের কঞ্চিতে দিনের বেলা শালিক, ফিঙে, বুলবুলি ও রাতে পেঁচাসহ নানা জাতের পাখি এসে বসছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম প্রামাণিক জানান, পার্চিং পদ্ধতি ধান চাষে অত্যন্ত কার্যকরী ও পরিবেশ বান্ধব সুন্দর একটি পদ্ধতি। কৃষকদের মাঝে এ পদ্ধতি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার না করে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকদের ফসল উৎপাদনে খরচ কমে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে মহাদেবপুর উপজেলায় ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়