শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০১৯
নওগাঁর সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাকে ভুয়া দাদা সাজিয়ে পোষ্য কোঠায় চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। ওয়াজেদ আলী জেলার বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের জগদিসপুর গ্রামের বাসিন্দা।তার বাবার নাম শফিকুল ইসলাম এবং দাদার নাম সায়েজ উদ্দীন।
তিনি নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি অফিসে ১৮/০২/২০১৮ ইং তারিখে চাকরিতে যোগদান করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অফিসে জমা দেয়া ওয়াজেদ আলীর নথিতে দেখা যায় বাবার নাম শফিকুল ইসলাম এবং তার দাদার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ উদ্দীন। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ডে ওয়াজেদ আলীর বাবার শফিকুল ইসলাম হলেও শফিকুল ইসলামের ভোটার আইডিতে তার বাবার নাম সায়েজ উদ্দীন (ওয়াজেদ আলীর দাদা) উল্লেখ করা আছে।
কিন্তু নিয়োগের সময় একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ উদ্দীনকে দাদা পরিচয় দিয়ে পোষ্য কোঠায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাপদে নিয়োগ নেয়া হয়েছে।
গত ১৮/০২/২০১৮ ইং তারিখে নিয়োগ নিয়ে নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পদেচাকরি করছেন ওয়াজেদ আলী। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে নিজের দাদা সাজিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগ নিয়ে গত ১৯ মাস থেকে চাকরি করে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে সরকারি টাকা কোষাগারে জমা দেয়া এবং তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ উদ্দীন বলেন, আমার বয়স প্রায় ৭৫ বছর। সংসার জীবনে আমার তিন মেয়ে। কোন ছেলে সন্তান নাই। আমি গরিব অসহায় একজন মানুষ। সরকার থেকে প্রদানকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যে ভাতা দেয়া হয় তা দিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। তিন মেয়ের সন্তান আছে। কিন্তু তাদের কারো চাকরি করার মত বয়স হয়নি। তারা এখনও পড়াশোনা করছে। আমার ভুয়া নাতি পরিচয় দিয়ে যদি কেউ চাকরি করে সরকার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তবে কিভাবে আমার নাম পরিচয় ব্যবহার করেছে আমি তার কিছুই জানিনা।
পাহাড়পুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সামছুল আলম বলেন, আব্দুল আজিজ একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার মেয়ে আছে, কিন্তু কোন ছেলে সন্তান নাই। সায়েজ উদ্দীন নামে ওই এলাকায় কোন মুক্তিযোদ্ধা নাই। আর মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে ভুয়া ভাবে যারা চাকুরি করেছেন, তা অন্যায়। সরকারের টাকা আত্মসাৎ করছে, যা বরদাস্ত করাযাবে না। তাদের ব্যবস্থা হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
এবিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী বলেন, আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কেন ঘাটাঘাটি করছেন। আপনারা যা পারেন করেন। এবিষয়ে আমি কোন কথা বলতে চাইনা।
নওগাঁ সদর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই। তবে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করে তাকে পদায়ন করা হলে এ অফিসে যোগদান করেছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সবে মাত্র অফিসে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। তবে নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিসে সার্ভিস বুকে যে তথ্য আছে এর বাহিরে আমরা কিছু বলতে পারিনা। তবে অভিযোগ সত্য হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়