ব্রেকিং:
কুসুম্বা শাহি মসজিদের জায়গা দখলে রাখা দোকানঘর উচ্ছেদ নওগাঁ-২ আসনের এমপি পদপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের গণসংযোগ বেহাল রাস্তা যেন নওগাঁর চুনিয়াগাড়ির গলার কাঁটা "মুতআহ বিয়ে, গুপ্তচর ক্যাথরিন শাকদাম ও ইরানের নিরাপত্তা: এক রাষ্ট মেয়ের বাবাকে মুসলিমদের মারধরের দাবিটি ভুয়া সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

মঙ্গলবার   ১৭ জুন ২০২৫   আষাঢ় ৩ ১৪৩২   ২০ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

নওগাঁ দর্পন
সর্বশেষ:
কুসুম্বা শাহি মসজিদের জায়গা দখলে রাখা দোকানঘর উচ্ছেদ নওগাঁ-২ আসনের এমপি পদপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের গণসংযোগ বেহাল রাস্তা যেন নওগাঁর চুনিয়াগাড়ির গলার কাঁটা "মুতআহ বিয়ে, গুপ্তচর ক্যাথরিন শাকদাম ও ইরানের নিরাপত্তা: এক রাষ্ট মেয়ের বাবাকে মুসলিমদের মারধরের দাবিটি ভুয়া সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
৭৮

"মুতআহ বিয়ে, গুপ্তচর ক্যাথরিন শাকদাম ও ইরানের নিরাপত্তা: এক রাষ্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২৫  

ইসরাইলি গুপ্তচর ক্যাথরিন শাকদাম

ইসরাইলি গুপ্তচর ক্যাথরিন শাকদাম

ইরান—একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র, যেখানে শিয়া মতবাদ অনুসারে দেশ পরিচালিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে, যা দেশটির ধর্মীয় বিশ্বাস, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা কাঠামো—সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

বলা হচ্ছে, একজন বিদেশি নারী সাংবাদিক, ক্যাথরিন পেরেজ শাকদাম, ইরানে প্রবেশ করে শিয়া মতবাদের বৈধ বিবাহব্যবস্থা "মুতআহ বিয়েকে" হাতিয়ার বানিয়ে প্রায় ১০০ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে স্পর্শকাতর রাষ্ট্রীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন উঠে—ইরানের গোয়েন্দা ব্যবস্থা কোথায়? ধর্মীয় আইনের অপব্যবহার কতটা ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনতে পারে?

 

কে এই ক্যাথরিন পেরেজ শাকদাম?

ক্যাথরিন একজন ফরাসি নাগরিক। নিজেকে তিনি এক সময় ইসলাম গ্রহণকারী ও ইয়েমেনি এক ব্যক্তির স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন। ইরানে প্রবেশ করেন ইসলাম, বিশেষত শিয়া আকিদা শেখার উদ্দেশ্যে। তিনি কাজ করেন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক হিসেবে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও তার কলাম ছাপা হয়েছে। কিন্তু এরপরই শুরু হয় নাটকীয় মোড়।

 

"মুতআহ বিয়ে"র ফাঁদ: ধর্মকে ঢাল বানিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি!

ক্যাথরিনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বলা হয়, তিনি শিয়া মতবাদে অনুমোদিত "মুতআহ" (অস্থায়ী বিয়ে) ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে ইরানের বহু শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছিলেন। এই সম্পর্কগুলোর মাধ্যমে তিনি তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য সংগ্রহ করেন।

তার অভিযুক্ত কৃতকর্মের কিছু দিক:

  • ইরানে অবস্থানকাল: প্রায় ১০ মাস

  • "মুতআহ" বিয়ের ফাঁদে ফেলেন প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা

  • একজন এমপি সংসদের গোপন আলোচনার তথ্য মুখে বলেছিলেন

  • ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড (IRGC), এমনকি সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির ঘনিষ্ঠদের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি

এই ঘটনায় প্রমাণিত হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কাঠামো কতটা দুর্বল হতে পারে যখন ধর্মীয় নিয়ম-কানুন ব্যবহৃত হয় ব্যক্তিগত আকর্ষণ বা সুবিধার জন্য।

 

ইরানের নৈতিকতা ও নিরাপত্তা: চরম প্রশ্নবিদ্ধ!

এই ঘটনার পেছনে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বার্তা হলো—ইরান নিজের ধর্মীয় আইন ও আদর্শকে নিজেই দুর্বল করে ফেলেছে। মুতআহ বিয়ে, যেটি শিয়াদের মতে বৈধ, তা যদি গুপ্তচরবৃত্তির অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায়, তবে সেই ব্যবস্থার নৈতিক অবস্থান কতটা দুর্বল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এটি এমন এক সময়ে ঘটে, যখন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ইরান সফর করেন এবং পরবর্তীতে তাকে হত্যা করা হয়। অনেকে বলছেন, তথ্য ফাঁসের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডেও ক্যাথরিনের ভূমিকা থাকতে পারে।

 

মুতআহ বিয়ের বিতর্ক: ধর্ম বনাম বাস্তবতা

সুন্নি মত অনুযায়ী:

  • মুতআহ বিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ।

  • এটি জেনার সমতুল্য হিসেবে বিবেচিত।

শিয়া মত অনুযায়ী:

  • এটি এখনো বৈধ এবং ইমামদের মত অনুসারে নির্দিষ্ট নিয়মে করা যেতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই ধর্মীয় বিধান যখন ব্যক্তিগত স্বার্থসাধনের হাতিয়ার হয়, তখন তা পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত নাড়িয়ে দেয়।

 

ধর্মীয় আইন নয়, অপব্যবহারই বিপদের মূল!

ইরানে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শুধুই একটি গুপ্তচর কাহিনি নয়—এটি এক ভয়াবহ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। যেখানে ধর্মীয় বিশ্বাস ব্যবহৃত হয়েছে অসাধু ব্যক্তিদের হাতের খেলনা হিসেবে।

অবশ্যই, মুতআহ বিয়ে শিয়া মতবাদ অনুযায়ী বৈধ হতে পারে, কিন্তু এর অপব্যবহার রুখতে না পারলে যে কোনো সমাজেই তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

প্রশ্ন একটাই: নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভাঙন কি শুধু একজন নারী গুপ্তচরের কারণে? নাকি গোটা কাঠামোই আজ ভেতর থেকে পচে গেছে?

নওগাঁ দর্পন