শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৫ ১৪৩০ ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২২
নিজের হাতে তৈরী ফল বাগানেই সুখ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছেন শিক্ষিত বেকার যুবক মুনিরুল ইসলাম। বর্তমানে তার ফল বাগানের প্রতিটি বরই গাছে দুলছে রসে ভরা সুমিষ্ট পরিপক্ক বল সুন্দরী বরই।
নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবাই বিলের পাড়ে অবস্থিত জবাই মধ্যে পাড়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক আলহাজ¦ শিশ মোহাম্মদ এর ছেলে শিক্ষিত বেকার যুবক মুনিরুল ইসলাম। লেখা পড়া শেষে চাকুরী নামের সোনার হরিণের পিছনে অনেক সময় ব্যায় করে হতাশ হয়ে তিনি গত ২০১৯ সালে নিজ গ্রামের পাশে অবস্থিত ৬ বিঘা জমি ১লক্ষ ২৬ হাজার টাকা বছর হিসেবে স্থানীয় একজন জোতদারের নিকট থেকে ইজারা গ্রহণ করেন। সেই জমিতে আমরূপালী আম ও বল সুন্দরী বরই গাছ রোপন করে গড়ে তোলেন দৃষ্টি নন্দন মিশ্র ফল বাগান। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া বরই চাষের অনুকুলে থাকায় তার বল সুন্দরীর গাছে প্রচুর বরই ধরেছে।
গাছের ডালে ডালে লাল টসটসে রসে টইটম্বুর পাকা পাকা বল সুন্দরী বরই আপেলের মত বাতাসে দোল খাচ্ছে। বরই গুলো বিক্রির উপযুক্ত হয়ে গেছে। ক্রেতাগণ যোগাযোগ করলেই তিনি বরই গুলো বিক্রি করবেন। ফল চাষী মুনিরুল আরও জানান, তিনি ওই ফল বাগান থেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এবারে মহান আল্লাহর রহমতে তার বাগানে বল সুন্দরী বরই এর বাম্পার ফলন হয়েছে। তার ৬ বিঘা জমির বরই উৎপাদনে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি আশা করছেন বাগানে রোপিত ৭৪০টি বরই গাছ থেকে এবার তিনি কম পক্ষে ৪৫০-৫০০মন বরই পাবেন। পাইকারী বাজারে ভাল দাম থাকলে খরচ বাদে ওই বাগান থেকে তার এবার প্রায় ৬লক্ষ টাকা আয় হবে। বাগানের বর্তমান অবস্থায় তিনি বেশ খুশি। তার দেখা দেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক এখন আম ও বরই চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
ফল চাষী মুনিরুল ইসলাম বলেন লেখা পড়া শেষে চাকুরী নামের সোনার হরিণের পিছনে অনেক ছুটাছুটি করেছি না পেয়ে হতাশা নিয়ে স্থানীয় বাজারে অল্প পুঁজি দিয়ে একটি ক্রোকারিজ সামগ্রীও ভ্যারাইটি দোকান করে ছিলাম। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে অতি কষ্টে কোন মতে জীবন যাপন করছিলাম।
এক পর্যায় জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষি উদ্যোক্তা ও বেকার যুবকদের পথের দিশারী সাপাহার বরেন্দ্র এগ্রোপার্কের সংগ্রামী পরিচালক সোহেল রানা ভাইয়ের বাস্তবায়িত কৃষি খামার ফল বাগান তৈরীর বিভিন্ন কার্যক্রম দেখে আমিও উদ্বুদ্ধ হয়ে ফল বাগান তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বর্তমানে আমরূপালী ও বরই মিলে ৯ বিঘা ফল বাগান গড়ে উঠেছে। আমার ফল বাগানের যে কোন সমস্যায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাগণ ও সোহেল রানা ভাইয়ের পরামর্শ নিয়ে থাকি।
জবাই গ্রামের কৃষক আজিজুল হক,শামিম হোসেন,দেলোয়ার হোসেন বলেন, বল সুন্দরী বরই চাষ করে মুনিরুল হোসেন সফল হয়েছেন। ওই সম্মিলিত মিশ্র ফল বাগান থেকেই মুনিরুলের জীবনের গতি পাল্টে যাবে। জীবনের হতাশা কেটে গিয়ে অল্পদিনেই তার ভাগ্যে বদলের সম্ভাবনা দ্বার প্রান্তে এসে উঁকি দিচ্ছে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়