মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ৫ ১৪৩০ ০৯ রমজান ১৪৪৫
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০১৯
নওগাঁর সাপাহারে চলছে এখন আম বানিজ্য গড়ে প্রতিদিন এখানে প্রায় ৫ কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হচ্ছে। রমজানের ঈদের পর হতে এখন পর্যন্ত এই বাজারে অন্তত: একশ পঞ্চাশ কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হয়েছে বলে বিভিন্ন আমব্যাবসায়ী ও বাগান মালিকগন জানিয়েছেন। দেশের জাতীয় পর্যায়ে সাপাহার এখন জাতীয় আম ব্যাবস্যা কেন্দ্র হিসেবে রুপলাভ করেছে বলে মঙ্গলবার উপজেলায় অনুষ্ঠিত নবাগত জেলা প্রশাসকের এক মতবিনিময় সভায় তা আলোচিত ও স্বীকৃত হয়েছে।
আজথেকে অন্তত: ১০বছর আগে এই উপজেলায় বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের ধানের উঁচু জমিতে ধান চাষাবাদের পরিবর্তে হাই ব্রিড জাতীয় আম্রপলী আমের চাষ করে। ছোট ছোট এ সব গাছ রোপনের এক বছর পর হতেই গাছে আম ধরতে শুরু করে এবং আমের গুনগত মান অন্যান্য আমের তুলনায় বেশ ভাল হওয়ায় বাজারে বেশ চড়া দামেও বিক্রি হয় সাপাহারের আম। সে থেকে একের পর এক কৃষক দিন দিন তাদের ধানচাষের জমির সংখ্য কমিয়ে আম চাষে মনোনিবেশ করতে থাকে।
বর্তমানে সাপাহার উপজেলায় প্রায় সাড়ে চারশ’ হেক্টর জমিতে এই জাতীয় আমের চাষ করা হয়েছে। গত বছর আমের বাজার বেশ মন্দা গেলেও এবছর আমের বাজার বেশ চড়া। বর্তমানে প্রতিমন রুপালী (আ¤্রপলী) আম ৩হাজার থেকে ৩হাজার ৫শ’টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এবছর এই উপজেলার কৃষকগন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে কিছুটা হলেও তাদের সে ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে আমে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমের একমাস অতিবাহিত হলেও কাঙ্খীত কোন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকগন আমন আবাদ ছেড়ে দিয়ে প্রতিযোগীতা মুলকভাবে তাদের আমনচাষাবাদের জমিতে আম গাছ রোপন করে চলেছে।
সাপাহারের কৃষকগন যে হারে আমের বাগান করে চলেছে তাতে করে আগামী দু’এক বছরে হয়ত এই উপজেলায় ধান চাষের জমি খুজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন। বর্তমানে সাপাহার উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী পোরশা ও পত্নীতলা উপজেলার আমগুলিও কেনা-বেচা হচ্ছে সাপাহারে।
গত কয়েক বছর হতে সাপাহারে আমের বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠলেও এবছর তার পরিধি প্রায় দ্বিগুন হারে বেড়ে গেছে, দেশের চাপাই নবাবগঞ্জ, রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুরের মাদারী পুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিং সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে শত শত আম ব্যাবসায়ী এসেছে নওগাঁ জেলার সাপাহারে।
সাপাহার উপজেলার হাসপাতালের মোড় হতে গোডাউন পাড়া পর্যন্ত প্রায় ২কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আড়াইশ’ আমের আড়ত গড়ে উঠেছে। আড়তগুলি মেইন রাস্তার উভয় পার্শ্বে হওয়ায় প্রতিদিন সকাল ৯’ঁটা হতে বেলা ৩টা পর্যন্ত রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকায় স্কুল কলেজ পড়ৃয়া শিক্ষার্থী ও জরুরী কাজে নিয়োজিত ্এ্যামবুলেন্স, বিভিন্ন অফিসের গাড়ী ও পথচারীরা পড়ছে বিপাকে। এই দুই কিলোমিটার রাস্তা পার হতে তাদের সময় লাগছে ২থেকে আড়াই ঘন্টা।
সাপাহারে এবারে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩শ’কোটি টাকার আমের বানিজ্য হবে বলে সকল ব্যাবসায়ীগন, বাগান মালিকগন, আমব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক সাহা সহ অভিজ্ঞমহল মনে করছেন। বর্তমানে সাপাহারের আমের বানিজ্য জাতীয় পর্যায়ে রুপলাভ করলেও অদুর ভবিষ্যতে এই আমবানিজ্য কেন্দ্রটি আন্তর্জাতিক বাজারে রুপলাভ করার জন্য সর্বস্তরের ব্যাবসায়গন ও বাগান মালিকগন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন। সেসাথে আমের বাজার বা আড়তগুলি রাস্তার উভয় পার্শ্ব হতে সরিয়ে রাস্তা হতে অন্তত: ৫কিলোমিটার দুরে ৫/৭এশর জমি লিজ গ্রহণ করে সেখানে আমের বৃহত বাজার তৈরী করার জন্য ও সাপাহারবাসী উপজেলা প্রশাসনের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়