শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৯
পহেলা অগ্রহায়ন মানে নবান্নউৎসব। বাঙ্গালী সংস্কৃতিক অন্যতম একটি অংশ নবান্ন। শত বছর আগে থেকে চলে আসছে এই উৎসবটি। আমন মৌসুমের নতুর ধানের আগমনের সাথে বাঙ্গালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এই উৎসবটি। বিশেষ করে কৃষক ও ক্ষেত মজুরদের মহা আনন্দের উৎসব এই নবান্ন।
নবান্নকে ঘিরে উপজেলার প্রতিটি ঘরেই নানা আয়োজনচ ললেও পেয়াজের ঝাঁজের কারণে অনেকটাই তা অম্লান হয়ে গেছে। নবান্ন উৎসবে গ্রাম বাংলার ঘরে-ঘরে নতুন ধানের বিভিন্ন পিঠা, পায়েসসহ বাহারি খাবারের আয়োজন করা হয়। মেয়ে-জামাইসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে নিয়ে এসে বাহারী পিঠা, পায়েসসহ নানা সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। গ্রামের কোথাও কোথাও এ উপলক্ষে আয়োজন করা গ্রামীণ মেলার। তারই ধারাবাহিকতায় রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কয়েকশ তগ্রামে বর্তমানের নবান্নের আমেজ বিরাজ করছে। মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান কাটার ধূম। কোথাও ধান কেটে ঘরে নিয়ে আসছে কৃষকও শ্রমিকরা আবার কোথাও গ্রামের মেঠোপথে ধান পরিস্কার করারকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষানীরা। তাদের হাতে সময় খুবই কম।বাড়িতে মেয়ে-জামাই ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা আসবে দ্রুতধানের কাজ শেষ করতে মরিয়া কৃষকরা।
উপজেলার কাটরাশইনগ্রামের কৃষক রনজিত সাহা বলেন নবান্নআমাদের বাঙ্গালীর প্রাণের একটি উৎসব। এবার আমন ধানের বাম্পারফলন হয়েছে। কিন্তু পেয়াজের ঝাঁলে আমরা আর কি উৎসব করবো।বর্তমান বাজারে ধানের যে দাম রয়েছে সেই দাম অব্যাহত থাকলে কৃষকরা অনেকটাই লাভবান হবেন। আর এবার কৃষকদের নবান্ন উৎসবওভালো হবে বলে আশা করছি।
নবান্ন মানেই শীতের আগমনী বার্তা।ধানের দাম ভালো থাকায় এবার নবান্ন উৎসবটি একটু ভিন্ন ভাবেইকরার চিন্তা রয়েছে।মিরাট গ্রামের কৃষক কলিম উদ্দিন বলেন কৃষকদের শক্তিই হচ্ছে ধানের দাম। কয়েক বছর যাবত ধানে লোকশান দেওয়ায় আমার পরিবার থেকেহারিয়ে যেতে বসেছে নাবান্নের আনন্দ। কিন্তু বর্তমানে পেয়াজের দাম আমাদের নবান্ন উৎসবকে অনেটাই অম্লান করে দিয়েছে। বাড়িতে মেয়ে-জামাই ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আসবো।কিন্তু পিয়াজ কিনতে গেলে ফকির হতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রারচেয়ে বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের আমান ধানের চাষ হয়েছে।মোট ১৮হাজার ১শত ২৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষ করা হয়েছিলো। এরমধ্য কাটারী ভোগ ৪শত ২ হেক্টর, পায়জাম ১হাজার ২শত হেক্টর, স্বর্ণা ২হাজার ৯শত হেক্টর, বিনা-৭ ৯শত ১৫হেক্টর ও রেকর্ড পরিমাণ চিনিআতপ ১১হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।
তবে বিগত সময়ের চেয়ে চলতি মৌসুমে চিনিআতপ ধানের রেকর্ড পরিমাণ বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে বলে কৃষি অফিস জানায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলছে আমন ধান কাটা ওমাড়াইয়ের কাজ। বিঘা প্রতি ২০-২২মণ হারে ফলন পাচ্ছে কৃষকরা। বর্তমানে কৃষকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। তেমন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায়, পোকা-মাকড়ের তেমন কোন বড় ধরনের আক্রমণনা হওয়ায়, কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও কৃষি অফিসের সার্বিকতত্ত্বাবধানে এই বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে। তবে আগামীতে কোন সমস্যা না হলে আর অল্পকিছু দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে আমন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ।
এন/কে
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়