শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২০
বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকার। আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশের অনুলিপি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে পৌঁছানোর পরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে। এমন তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য দেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম সরকার চাইলে খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি আইন অনুসারে মুক্তি দিতে পারে। বহুদিন পরে হলেও সরকার সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে মুক্তি দিচ্ছে। এখন তার মুক্তির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুসারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। কারা কর্তৃপক্ষ থেকে চিঠি যাবে বিএসএমএমইউ-তে। এরপরই তিনি মুক্তি পাবেন।
সাজা স্থগিত থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া পূর্ণ পুলিশি নিরাপত্তায় থাকবেন কিনা জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জানান, সাজা স্থগিত থাকা অবস্থায় পুলিশি নিরাপত্তার কোনও বিধান আইনে নেই। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তার (খালেদা জিয়া) জন্য পুলিশি নিরাপত্তা রাখা হবে।
এর আগে আইনমন্ত্রী জানান, খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেদিন তার আবেদন গ্রহণ করবে, সেদিন তিনি মুক্তি পাবেন।
আনিসুল হক বলেন, তার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করার শর্তে এবং ওই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, এই শর্তে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমি মতামত দিয়েছি। সেই মতামত এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে গেছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হচ্ছে আইনি প্রক্রিয়ায় এই দুই শর্তে দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হোক।
তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আগে ছয় মাস যাক, তারপর দেখা যাবে। তিনি বলেন, এখানে কিন্তু বলা হচ্ছে না তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারবেন না। সেটা তার অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। তবে শর্ত হচ্ছে, তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সরকার মানবিক কারণে সদয় হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা (উপধারা-১) অনুযায়ী এটা আইনি প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তার সঙ্গে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। এরমধ্যে তাকে (খালেদা জিয়া) দু’বার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে কাটানোর পর তাকে ফের কারাগারে নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় বেশ কিছু দিন বিএসএমএমইউ-তে আছেন তিনি।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রথমে পাঁচ বছরের এবং পরবর্তী সময়ে তা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। এই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়