মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২০
নওগাঁর মান্দায় অপবাদ সইতে না পেরে ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রী (১২) বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অপহরণের ১২দিন পর গত শুক্রবার ঢাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
গত ৯ মার্চ স্কুলে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মান্দা সদর ইউনিয়নের ভোলাম গ্রামের তিন সন্তানের জনক ইমরান আলী শাহ (৪৫)। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার শাহ।
ভিকটিমের দাদা জানান, ‘গত ৯ মার্চ আমার নাতনি প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বিকেল পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ১০ মার্চ মান্দা থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করি। তিনি আরও বলেন, খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে জানতে পারি একই এলাকার ইমরান আলী আমার নাতনিকে স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায়ই উত্যক্ত করে আসছিল। নাতনি নিখোঁজের দিন থেকে ইমরানও লাপাত্তা ছিল। এ থেকে ইমরানের ওপর আমার সন্দেহের সৃষ্টি হয়।’
চিকিৎসাধীন স্কুলছাত্রী জানান, ‘ঘটনার দিন আমি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে প্রতিবেশি চাচা ইমরান আলী কথা আছি বলে আমার পথরোধ করে। পরে চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দিলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর আর কিছুই আমি বলতে পারব না।’
ভিকটিম আরও বলেন, অপহরণ করে ঢাকার সাভারে তার জ্যাঠাতো বড়ভাই সেলিমের বাসায় নিয়ে আমাকে আটকে রাখে। বাসার একটি কক্ষে আমাকে তালাবদ্ধ করে রাখা হত। সেখানে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে ইমরান। ওই বাসায় অবস্থানকালে একটি কাবিননামায় জোরপূর্বক আমার স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে সবধরণের ফায়দা হাসিল করেছে ইমরান।
স্থানীয়রা জানান, ইমরানের পরিবারকে চাপের মুখে রেখে গত শুক্রবার ঢাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। পরে ওই রাতেই ভিকটিমকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়। শনিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে লোকজন বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য করতে থাকেন। এসব অপবাদ সইতে না পেরে এদিন বিকেলে ভিকটিম বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন ভিকটিমের সুস্থ হতে আরও দু-তিন সময় লাগবে।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। ভিকটিম সুস্থ হলে তার বর্ণনা শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স/সা
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়