বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৪ ১৪৩১ ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২২
নওগাঁর মান্দায় ১৬ বিঘা জমিতে রোপণকরা বোরো ধান নষ্ট হচ্ছে জমিতেই। পাকার পর সময়মত কেটে ঘরে না তোলায় ধান গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। বর্তমানে তাতে চারা গজিয়ে সবুজ আকার ধারণ করেছে। এতে চলতি মৌসুমে ওই জমি থেকে অন্তত ৩০০ মণ ধান উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে।
চাষির অভিযোগ, ওই সম্পত্তি একবছরের জন্য লিজ নিয়েছেন। গতবছরের ৩০ চৈত্র লিজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আবেদনের পরেও চলতি বাংলা ১৪২৯ সনের জন্য ওই সম্পত্তি তাঁকে আর লিজ প্রদান করা হয়নি। এ কারণে জমি থেকে ধান কাটছেন না তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, বিবাদমান সম্পত্তি নিয়ে সরকারকে বিবাদী করে মামলা করেন দুর্গাপুর গ্রামের সাহাদৎ হোসেন। মামলায় তাঁদের পক্ষে ৩বার রায় দেন আদালত। রায়ের আগেই ওই সম্পত্তি দুর্গাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন গংদের লিজ প্রদান করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু রায়ের পর ওই সম্পত্তি লিজ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তাঁরা আরও বলেন, দেলোয়ার হোসেন ধান রোপণ করেছেন, তিনিই কাটবেন। ধান কেটে না নেওয়ার পেছনে দেলোয়ার হোসেনের অন্য কোনো মতলব রয়েছে কিনা এনিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। তাঁদের দাবি জমিতে ধানগুলো নষ্ট হলে অন্তত ৩০০ মণ ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হবে দেশ।
জমির মালিকানা দাবিদার দুর্গাপুর গ্রামের সাহাদৎ হোসেনের ভাতিজা মামুনুর রশিদ বলেন, ১৯৯৭ ও ৯৮ সালে দুটি দলিলমুলে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের বিনয় কুমার সরকার ও বিনোদ কুমার সরকারের কাছ থেকে ৫ দশমিক ৪২ শতক জমি কবলা করেন। কিন্তু ৭২ সালে ওই সম্পত্তি ‘খ’ তফসীলভুক্ত হওয়ায় রেকর্ড সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা করা হয়। মামলায় তাঁদের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করলে সরকার পক্ষ আপিল করে। আপিলেও সরকার পক্ষের বিরুদ্ধে রায় প্রদান করে আদালত।
তিনি আরও বলেন, বাংলা ১৪২৮ সনে ওই সম্পত্তি দুর্গাপুর গ্রামের দেলোয়্রা হোসেন গংদের লিজ প্রদান করে স্থানীয় প্রশাসন। রায় তাঁদের অনুকুলে হওয়ায় যাবতীয় কাগজপত্র ইউএনও ও এসিল্যান্ডের দপ্তরের দাখিল করলে চলতি বছরের জন্য লিজ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিস্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওই সম্পত্তিতে বোরো ধান রোপণ করেন লিজ গ্রহিতা দেলোয়ার হোসেন গংরা। লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ওই সম্পত্তিতে রোপণ করা ধান কেটে নিচ্ছেন না তিনি।
ওই সম্পত্তির লিজ গ্রহিতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গতবছরের ৩০ চৈত্র লিজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। নবায়ন চেয়ে এসিল্যান্ড অফিসে আবেদন করেছি। কিন্তু আমকে ডিসিআর দেওয়া হয়নি। এ কারণে আমি ধান কাটতে জমিতে যায়নি। ধান কাটতে কেউ বাধা দিচ্ছেন না বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিবাদমান সম্পত্তি সরকারের ‘খ’ তফসীলভুক্ত সম্পত্তি হওয়ায় এক বছর মেয়াদী লিজ প্রদান করা হয়েছে। উক্ত সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় বর্তমানে লিজ প্রদান বন্ধ রাখা হয়।
আন কেটে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যিনি ধান রোপণ করবেন তিনিই কাটবেন। যেহেতু ওই সম্পত্তিতে দেলোয়ার হোসেন ধান রোপণ করেছেন এজন্য তাঁকেই কেটে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে ধান কেটে না নিলে তদন্ত করে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়