শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৪ ১৪৩০ ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২১
নববর্ষের প্রথমদিনেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতিহাটের মাছবাজারে প্রত্যেকদিন টোল আদায়ের প্রতিবাদে বেচাকেনা বন্ধ করে দেন আড়তদাররা। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আড়তদারদের এ সিদ্ধান্তে চরম বিপাকে পড়েন হাটে আগত মাছচাষিরা। পরে এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপে ইজারাদার ও আড়তদারদের মাঝে দ্বন্দ্ব নিরসন হলে বেচাকেনা স্বাভাবিক হয়। এতে স্বস্তি ফিরে আসে মাছচাষিদের মাঝে।
স্থানীয়রা জানান, পহেলা বৈশাখ ও রমজানের প্রথমদিন উপলক্ষে এ বাজারে অন্তত ৫০ লাখ টাকার মাছ আমদানি হয়েছিল। কিন্তু ১৪২৮ সালের পহেলা বৈশাখ থেকে প্রত্যেকদিন টোল আদায়ের চেষ্টা করে ইজারাদারের লোকজন। আগেও তারা প্রত্যেকদিন টোল আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে বছরের প্রথমদিনেই আড়তদাররা মাছ বেচাকেনা বন্ধ করে দেন। এতে হাটে আগতরা চরম বিপাকে পড়েন। সময়মত মাছ বিক্রি করতে না পারায় অনেকের মাছ পচে গেছে। লোকসান গুনতে হয়েছে অনেককে।
বুধবার নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠখৈর এলাকার আব্দুল মান্নান দেশিয় প্রজাতির ২০০ কেজি মাছ বিক্রি করতে সতিহাটের মাছবাজারে এসেছিলেন। মাছ পরিবহণের জন্য তাকে একটি ভুটভুটি ভাড়া করতে হয়েছিল। হাটে এসে আড়ত বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েন। পরে অনেক কম দামে মাছগুলো তাকে বিক্রি করতে হয়েছে। নওগাঁর হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের মাখনা কমলকোটা গ্রামের উজ্জল হোসেন দুটি ভটভটিতে রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে বাজারে এসেছিলেন। কিন্তু সময়মত বিক্রি করতে না পারায় পরে অনেক কম দামে সেগুলো বিক্রি করতে হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ি সুমন জানান, একটি পুকুর থেকে ২২০ কেজি রুই মাছ ৩০ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে হাটে এনেছিলেন। কিন্তু বাজারে এসে তার মাথায় হাত পড়েছে। ৩০ হাজার ৪০০ টাকার মাছ তাকে বিক্রি করতে হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ টাকায়।
বাজারের দুইভাই মৎস্য আড়তের মালিক মানিক, আল্লাহর দান আড়তের মালিক আব্দুল খালেক, বিসমিল্লাহ আড়তের মালিক রাজুসহ আরও অনেকে জানান, হাটে আগত প্রত্যেক ভুটভুটি থেকে ৫০ টাকা, প্রত্যেক ডালি থেকে ১০ টাকা করে খাজনা কেটে ইজারাদারের লোকজনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। মাঝেমধ্যেই তারা প্রত্যেকদিন খাজনা নেওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। কিন্তু সফল হতে পারেনি। নতুন বছরের প্রথমদিন থেকেই সপ্তাহের ৭দিনই তারা খাজনা আদায় করবে বলে ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে আড়তদাররা বেচাকেনা বন্ধ করে দেন।
সতিহাট মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি চঞ্চল কুমার হাওলাদার জানান, সপ্তাহের মঙ্গল ও শুক্রবার হাটবারে মাছচাষিদের নিকট থেকে খাজনা কেটে তা ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ইজারাদার সপ্তাহের সাতদিনই খাজনা দাবি করায় দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এনিয়ে কয়েকদফা বৈঠক হলেও তা নিরসন হয়নি। হাটবার ছাড়া খাজনা না দেওয়ার দাবিতে তারা মাছ বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
মান্দা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইমরানুল হক জানান, সংবাদ পেয়ে মান্দা থানার ওসি শহিনুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সতিহাটের মাছবাজার পরিদর্শন করি। আড়তদারদের দাবি যৌতিক হওয়ায় হাটবার ছাড়া টোল আদায় না করার জন্য ইজারাদারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়