বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২০
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার আলোচিত-সমালোচিত রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের এক বছরের কারাদন্ড হওয়ায় এলাকাবাসী মিষ্টি বিতরণ করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের মাতাজীহাট এলাকায় উল্লাসিত জনতার মধ্যে প্রায় এক মণ মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, দিলীপ কুমার সাহা নামে এক সংখ্যালঘু ব্যাক্তির দোকানে ভাঙচুর, লুটপাট ও মারধরের মামলায় চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমসহ নয়জনকে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমকে এক বছরের কারাদন্ড ও অপর আট আসামিকে তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ রায়ে এলাকাবাসী খুশি। ওই খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয়রা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দিলীপ কুমার সাহা ২০১৭ সালে কুরবানীর ঈদ উপলক্ষে উপজেলার মাতাজী হাটে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ইজারাদারের লোকজন গবাদিপশু কেনাবেচায় অতিরিক্ত হাসিল (টোল) আদায়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ করায় ওই বছরের ৩০ আগস্ট মহাদেবপুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ছয়জনকে জরিমানা করেন।
এ ঘটনার জেরে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফুটবল খেলার মাঠে রাইগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম দলবল নিয়ে দিলীপ কুমারের ওপর হামলা চালায় এবং মাতাজী হাটে অবস্থিত দিলীপ কুমারের মালিকানাধীন শুভজিৎ হোটেল এন্ড মিষ্টান্ন ভান্ডার নামের একটি দোকানঘরে ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট করে চেয়ারম্যানের লোকজন। এ ঘটনায় ওই দিনই মহাদেবপুর থানায় চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দিলীপ কুমার।
পুলিশি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর গত বছরের ১৪ফেব্রুয়ারি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানির পর গত ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক সাইফুল ইসলাম রাইগাঁ ইউপি চেয়ারম্যানকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড, তার তিন সহোদর সুলতান মাহমুদ, বদিউল আলম, শাহ আলমসহ মামলার অপর আট আসামিকে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর আসামিরা আদালতে জামিন আবেদন করলে চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম ছাড়া অন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। মঞ্জুর আলমকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী আব্দুস সামাদ ও মোকসেদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোফাখখার ইসলাম।
এর আগেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, মারপির, ভাঙচুর ও বিভিন্ন ঘটনায় বিতর্কিত হয়েছেন চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম। ২০১৭ সালে উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের কুন্দুনা গ্রামের এক নারী তার বিরুদ্ধে আদালতে শ্রীলতাহানির মামলা দায়ের করেন। যার সি আর নং-৩০৯/১৭। এছাড়াও চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে।অপরদিকে, নাউরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে মারধরের মামলার অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ায় মঞ্জুর আলমকে ২০১৭ সালের ৬ জুলাই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
স/সা
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়