মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২০
নওগাঁর মহাদেবপুরে বারোমাসি কার্টিমন আমের বাগান করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আজিজুল হক। আর সেই স্বপ্নকে তিনি বাস্তবে রুপান্তর করতেই রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। গড়ে তুলেছেন মনোমুগ্ধকর একটি আম বাগান। আর গাছে গাছে আম ঝুলছে।মাত্র ১০মাস বয়সেই এসেছে ফলন। এরই মাঝে তিনি দুই দফা আম বিক্রি করেছেন।
আজিজুল হক জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমের বাগান করার জন্য স্বপ্ন দেখতেন। সেই ভাবনা থেকেই তৈরী করেন আমের বাগান। বাড়ির পাশে প্রসাদপুর মাঠে আড়াই বিঘা জমিতে ৫১৪টি আমের চারা রোপন করেন। জমি প্রস্তুত করা, চারা লাগানো ও জমির চারপাশে বেড়া দেয়াসহ খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ’ টাকা।
পরবর্তীতে মানুষ ও গরু-ছাগল থেকে ফসল রক্ষা করতে জিআই তারের বেড়া দেয়ায় অতিরিক্ত আরো ৫০ হাজার টাকা বেশি গুনতে হয়েছে তাকে। তিনি জানান, পাশের গ্রামের এক নার্সারি মালিক চুয়াডাঙ্গা থেকে মাতৃগাছ নিয়ে আসেন। সেখান থেকে ১১০ টাকা পিচ চারা সংগ্রহ করেন । দশ মাস বয়সের প্রতিটি গাছে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ১০টা পর্যন্ত আম ধরেছে। গত বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে আমের গুটি একটু কম এসেছে। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি গাছে ওষুধ স্প্রে করছেন।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের শুরুর দিকে বাগান করে প্রথম বার ১০মাস বয়সের ৩শ’ টাকা কেজি দরে কিছু আম বিক্রি করেছেন। মঙ্গলবার দ্বিতীয় বার ৪০ কেজি আম বিক্রি করেন তিনি। প্রতি মন আমের মুল্য ১২ হাজার টাকা। ১৫-২০ দিন পরে আরো প্রায় ২০ কেজি আম বিক্রি হবে হলে আশা করছেন। দুই বছরের মধ্যে আম বাগানের সম্পূর্ণ খরচ উঠে আসবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলহাজ্ব আজিজুল হকের বাড়ি নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার ইশ^রলক্ষীপুর গ্রামে। গ্রামের পাশের ছোট একটি বাজার যার নাম পাঁঠাকাটা বাজার। সেই বাজারেই গড়ে তুলেছেন তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, রড, সিমেন্ট, লোহা ও টিনের দোকান। ব্যবসা ভালই চলতো।
কিন্তু কোন কিছুতে ব্যবসায় তার মন বসতো না। দোকান ছেলের হাতে দিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করে তিনি বারোমাসি কার্টিমন আমের বাগান করেন। বাগান করার পর ১০ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফলতা তার হাতে এসে ধরা দিয়েছে। তিনি এখন একজন সফল বারোমাসি আম চাষি হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
এখন তিনি আম বাগান বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছেন। আগামিতে ১০ বিঘা জমিতে আম বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। আজিজুলের মতে, ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা স্বপ্ন নয়। যে স্বপ্ন মানুষকে ঘুমাতে দেয় না। সেটাই প্রকৃত স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকেই তিনি বাস্তবে রুপ দিয়েছেন।
মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে কি ভাবে ফল নির্ভর করা যায় সেই পরিকল্পনায় কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন ভাবে ফলমুল চাষ করে ভাতের ওপর থেকে চাপ কমাতে হবে। আমের ভরা মৌসুমে চাষিরা দাম পান না। কারন এ সময় আম একসাথে বাজারে ওঠে। কৃষি বিভাগ থেকে নতুন জাত বারোমাসি কার্টিমন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়