শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯
নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রী কলেজে ডিগ্রী শাখা এমপিও ভূক্ত না হওয়ায় ৪৭ লক্ষ টাকা ফেরত এর দাবীতে ক্ষুদ্ধ শিক্ষকেরা অধ্যক্ষকে প্রায় ২ ঘন্টা তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।
অবশেষে ক্ষুদ্ধ শিক্ষক ও অধ্যক্ষর দর কশাকশির মাধ্যমে অধ্যক্ষর নামীয় সোনালী ব্যাংক বদলগাছী শাখার একটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে অধ্যক্ষকে বেলা ১ টার সময় অবরুদ্ধ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বেলা ১১ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত কলেজ চলাকালিন সময়ে।
জানা যায়, বদলগাছী মহিলা কলেজে ২০০৫ সালে ডিগ্রী শাখা খোলা হয়। তখন ডিগ্রী শাখায় সরকারি নিয়োগ বিধি মোতাবেক ও কলেজ উন্নয়ন ফান্ডে মোটা অংকের টাকা ডোনেসন নিয়ে ১১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত কলেজের ডিগ্রী শাখা খোলার দীর্ঘ প্রায় ১৪ বৎসর অতিবাহিত হলেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকেরা বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত থাকে।
সম্প্রতি এমপিওভুক্তিতে ও ডিগ্রী শাখা এমপিও না হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী আগামী ৬ ডিসেম্বর অবসর গ্রহন করবেন। এমন বিষয়টি শিক্ষকদের মাঝে জানা জানি হয়ে পড়লে তাদের নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির জন্য অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীকে বিভিন্ন সময়ে প্রদানকৃত মোট ৪৭ লক্ষ টাকা ফেরতের দাবী করে শিক্ষক ফরহাদ হোসেন এর নেতৃত্বে সকল শিক্ষক শনিবার বেলা ১১ টায় কলেজ চলাকালিন অধ্যক্ষর কক্ষে বৈঠকে বসে অধ্যক্ষর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেওয়া হয়।
এর এক পর্যায়ে বৈঠক চলাকালিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাহির থেকে এক শিক্ষক দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। এর পর অধ্যক্ষর কক্ষে অবস্থিত শিক্ষক ফরহাদ হোসেন ও অন্যান্য শিক্ষকদের চাপের মুখে অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন সোনালী ব্যাংক বদলগাছী শাখার একটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করে দিলে ক্ষুদ্ধ শিক্ষকদের পক্ষে ফরহাদ হোসেন ওই চেক গ্রহন করে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্তি দিয়ে তারা দ্রুত কলেজ ত্যাগ করেন।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর সাথে কলেজে গিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার কলেজের ডিগ্রী শাখার শিক্ষকেরা তাকে কৌশলে অবরুদ্ধ করে ৪৭ লক্ষ টাকা দাবী করেন। তাৎক্ষনিক ভাবে আমি টাকা দিতে না পারায় শিক্ষক ফরাদ হোসেন এর নেতৃত্বে সকল শিক্ষক আমাকে ব্যাপক চাপের মুখে ফেলে। আমি মান সম্মানের ভয়ে আমার নিজ নামীয় সোনালী ব্যাংক, বদলগাছী শাখার একটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর দেই। তারা আমার স্বাক্ষর করা ফাঁকা ব্যাংক চেকটি নিয়ে চলে যান।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আগামীকাল রবিবারে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদারকে নিয়ে মিটিং করা হবে। সেখানে উক্ত শিক্ষকেরা আমার ফাঁকা চেকটি ফেরত দিতে চেয়েছেন।
এবিষয়ে শিক্ষক ফরাদ হোসেন এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীকে অবরুদ্ধ বা তার কাছে থেকে ফাঁকা ব্যাংক চেক নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
খবর পেয়ে থানার ওসি তদন্ত আব্দুল মালেক ও এসআই আব্দুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর সাথে বিকেল ৩ টায় কলেজে গিয়ে সাক্ষাত করেন।
এবিষয়ে অত্র কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার এর সাথে সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ হয়নি।
স/শাহা
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়