শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নওগাঁ দর্পণ ডেস্ক :
প্রকাশিত: ১০ মে ২০২০
নওগাঁ নিয়ামতপুরে বিয়ের দাবিতে রঞ্জু রহমান নামে এক যুবলীগ নেতার বাড়িতে অনশন করছেন তার প্রেমিকা একই গ্রামের প্রবাসী আলম শরিফ বাবুলের স্ত্রী মোসা. সাথী বিবি (৩০)।
ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে ও মেয়ের সেলফোনের রেকর্ড এর মাধ্যমে জানা যায়, উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ১ সন্তানের জনক রঞ্জু রহমানের সাথে একই গ্রামের তাহের উদ্দিনের প্রবাসী ছেলে আলম শরিফ বাবুর স্ত্রী ১ সন্তানের জননী সাথী বিবির দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। যুবলীগ নেতা প্রতারক লম্পট রঞ্জু রহমান বিয়ের আশ্বাস দেয় সাথীকে।
পরে প্রেমিকা সাথী বিবি গত ২৭ এপ্রিল প্রথম তার প্রেমিক যুবলীগ নেতা রঞ্জু রহমানের বাড়ীতে গিয়ে বিয়ের দাবী জানাই। লম্পট প্রতারক রঞ্জু রহমান তাকে পাত্তা না দিলে সে নিয়ামতপুর থানায় অভিযোগের জন্য যায়। থানায় কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় সে পরে যুবলীগ নেতার বাড়ীতে আবারও গিয়ে বিয়ের দাবীতে অবস্থান শুরু করে। তখন রঞ্জু রহমান সাথী বিবির মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবিসহ সমস্ত প্রমান মুছে ফেলে।
যুবলীগ নেতা রঞ্জু রহমান জানান, আমার রেদোয়ান রহমান রেজবি নামে আড়াই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। প্রবাসী আলম শরিফের পরিবারের সাথে আমাদের খুব সুন্দর সম্পর্ক। ঐ পরিবারের যে কোন বিষয়ে আমার সাথে শেয়ার করে। বিদেশ থেকে আসা টাকা তোলা থেকে সমস্ত কাজ আমিই করি। আর সাথী মানসিক রোগী। সে অনেক সময় এমন কিছু আচরণ করে যা স্বাভাবিক মানুষ করতে পারে না। সাথীও ঐ দিন মানসিক সমস্যার কারণেই এরকম আচরণ করে। আমার বাড়ীতে আসলে আমি তার মাকে সংবাদ দিলে পরে তার মা এসে তাকে নিয়ে যায়। এখন সে বাবার বাড়ীতে আছে।
এদিকে অনশনরত প্রেমিকা সাথী বিবি বলেন, রঞ্জু রহমানের সাথে আমার দেড় বছরের সম্পর্ক। আমার স্বামী সৌদি আবর গিয়ে নয় মাস হয়েছে। আমার স্বামী দেশে থাকতে থেকেই আমাদের সম্পর্ক। আমরা স্বামী স্ত্রীর মত চলাফিরা করতাম। আগে রঞ্জু আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতো। আমাকে ব্যবহার করার জন্য। বলতো চলো ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করি, কোন রেজিষ্ট্রি করবো না। কেউ জানতেও পারবে না।
কিন্তু আমি বার বার নাকচ করতাম। বলতাম এটা হয় না। সত্যি কখনও চাপা থাকে না। একদিন জানতে পারবে। তখন দুটি সংসারই নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু যখন রঞ্জুর পক্ষের সন্তান আমার পেটে আসে তখন আমি তাকে বিয়ের কথা বলতাম। তখন রঞ্জু বিয়ের কথা এড়িয়ে গিয়ে সন্তান নষ্টের কথা বলতো। আমি বাধা দিতাম।
গত ১ এপ্রিল লক ডাউনের সময় যখন আমি অসুস্থ্য হয়ে যাই তখন রাজশাহীতে নিয়ে গিয়ে একটি ক্লিনিকে আমার ২ মাসের সন্তান নষ্ট করে। আমি রঞ্জুকে বিয়ে করতে চাই। সে আমার মান-সম্মান জীবন যৌবন সব নষ্ট করে দিয়েছে। আর তাই আমি তার বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তার বাড়ীতে গেলে সে আমার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে প্রেমের সন্তানের সব প্রমান নষ্ট করে দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাম বলতে অনইচ্ছুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি আমরা পরস্পর শুনেছি। অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে কেউ আসে নাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনা সত্য। আমি গত গুজিশহর মেলার মধ্যে শুনেছি। কিন্তু আমি কিছুই বলেনি। রঞ্জু একটু অন্য প্রকৃতির ছেলে। সেইদিন রাতে যখন মেয়েটি রঞ্জুর বাড়ীতে আসে তখনই আমি শুনেছি। সে মেয়েকে বুঝিয়ে শুনিয়ে অভিভাবককে ডেকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিষয়টি তখনই ভাইরাল হয়ে যায়।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়