শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সাপাহার উপজেলায় নিখোঁজের ৩৮ বছর পর নুরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি বাড়ি ফিরে আসার পর পরিবারে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের ঢেউ বইছে। সাপাহার উপজেলার দক্ষিণ আলাদীপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু বাড়ি ফিরেও গ্রাম্য ফতোয়ার কারণে স্ত্রীর সাথে দেখা করতে পারছিলেন না তিনি।
একপর্যায়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে স্ত্রীসহ পরিবারের সবাইকে কাছে পান নুরুজ্জামান।
এলাকাবাসী জানায়, নুরুজ্জামান ১৯৮২ সালে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে বাবার ওপর অভিমান করে স্ত্রী-সন্তান রেখে ঘর ছাড়েন। পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে হাল ছেড়ে দেয়। এরপর নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফন বিবি সে সময় তার গর্ভের সন্তান ও ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে উপজেলার কৃষ্ণসদা গ্রামে তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্বামীর পথ চেয়ে দ্বিতীয় বিয়ে না করে সেখানেই সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। এর মধ্যে বড় হয়ে তার সন্তানরাও বিয়ে করেছে। ৩৮ বছর পর গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হঠাৎ করে নুরুজ্জামানের আগমন ঘটে গ্রামে। তার ফেরার খবরে এলাকায় বেশ হৈচৈ পড়ে যায়।
এ খবর পেয়ে নানা বাড়ি থেকে তার ছেলেরা ছুটে আসেন। এই আনন্দের মুহূর্ত দেখার জন্য শত শত লোক সেখানে ভিড় করে। তবে ফিরে আসার তিনদিন পার হলেও স্থানীয় মাতব্বরদের ফতোয়ার কারণে স্ত্রীর সাথে দেখা করতে পারছিলেন না নুরুজ্জামান। ফতোয়া দিয়ে তারা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ১২ বছর সম্পর্ক না থাকলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এ কারণে নুরুজ্জামানকে স্ত্রীর সাথে দেখা বা কথা বলতে দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে নুরুজ্জামান বলেন, আমি বাবার ওপর রাগ করে বাড়ি হতে বের হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর দীর্ঘ দিন রংপুর শহরে থেকেছি। আর বাসায় ফিরব না ভেবে সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার শুরু করি। ওই সংসারে আমার তিন ছেলে রয়েছে। বাড়িতে ফেরার ইচ্ছা হলেও বিভিন্ন কারণে আর ফেরা হয়নি।
গোয়ালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মুকুল জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না। পরে জেনে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কল্যাণ চৌধুরী জানান, বিষয়টি জানার পর বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধান করে দিয়েছেন।
স/এমএস
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়