বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১১ ১৪৩১ ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এই জেলার ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল নামে পরিচিত পোরশা উপজেলা। গত কয়েক বছর আগে যেখানে বৃষ্টি নির্ভর ধান ছাড়া আর কিছুই উৎপাদন করা সম্ভব হতো না। বর্তমানে জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে আমের জন্য বিখ্যাত এই উপজেলা।
বিভিন্ন আমি বাগান ঘুরে দেখা যায়, আম বাগানের আম গাছের ফাঁকে ফাঁকে এখন শোভা ছড়াচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। এক জমিতে এক সঙ্গে দুই ফসল হওয়ায় বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে কৃষকদের মাঝে। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে বাড়তি ফসল করে বাড়তি আয়ের আশা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। আমের আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আম বাগানে সরিষা চাষ হয়েছে এক হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে।
পোরশা উপজেলার সরাইগাছী গ্রামের চাষি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর ১০ বিঘা জমিতে আমের আবাদ করেছি। এছাড়া এই বাগানের অবশিষ্ঠ ফাঁকা জায়গায় সরিষার আবাদ করেছি। এর আগে কখনো এমনভাবে আবাদ করিনি। এই প্রথম আম বাগানে সরিষার আবাদ করলাম। কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
একই এলাকার মেজবাউল হক নামের আরেক চাষি বলেন, আম বাগানে সরিষার আবাদ এই প্রথম করলাম। সরিষার ফলনও ভালো হয়েছে। তেমন কোনো রোগবালাই নাই। আমি ১৫ বিঘা জমিতে আম ও সরিষার আবাদ করেছি। পরীক্ষামূলকভাবেই এবার আম বাগানে সরিষার আবাদ করেছি। এর আগে এমন উদ্যোগ কেউ নেয়নি। এবার এক সঙ্গে দুই ফসল পাচ্ছি। এতে বাড়তি আয় করতে পারবো।
উপজেলার নিতপুর গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে আমার ৫ বিঘা আম বাগানের ফাঁকে সরিষার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আমাদের এখানে বৃষ্টি নির্ভর আমন আবাদ ছাড়া তেমন কোনো ফসল হতো না। গত কয়েক বছর আমের আবাদ হচ্ছে। আর এইবার আমরা আমের পাশাপাশি বাগানে সরিষারও আবাদ করেছি। ফুল ধরেছে। রোগবালাই হয়নি। আম গাছেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। আশা করছি আম ও সরিষার দুই আবাদই ভালো হবে।
পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বলেন, ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কৃষকদের আম বাগানের ফাঁকা জায়গাগুলোতে সরিষার আবাদ করতে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তেমন কোনো রোগবালাই নেই। মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আমরা পরামর্শ ও সাধ্যমত সহায়তা করে থাকি।
আগামীতে আম বাগনে যেন সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পায় সেজন্য চাষিদের নিয়ে মাঠদিবস, উঠান বৈঠকসহ নানার ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান কৃষি অফিসের এই কর্মকর্তা।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়