শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, ধামইরহাট
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৯
নওগাঁর ধামইরহাটে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন দুলছে। গত বোরো মওসুমে ধান চাষ করে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এবার নতুন স্বপ্ন নিয়ে আমন ধান চাষ করেছে। তেমন কোন সমস্যা ছাড়াই কৃষক এবার রেকর্ড পরিমাণ জমির ধান কাটার সোনালী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তবে ধানের ন্যায্য মূল্য নিয়ে তারা সংশয়ে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর আদি বরেন্দ্র্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ধামইরহাট উপজেলায় এবার কৃষক ১৯ হাজার ৭শত ৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমিতে কৃষক স্বর্ণা জাতের ধান রোপন করেছেন। এছাড়া বিনা-১৭,কাটারীভোগ,ব্রিধান-৩৪,৪৯,৫১,৫২,৫৬,৭১,৭৫,৮০ ও ৮৭ জাতের ধানের চাষ করা হয়েছে। অনেক জমিতে পোলায়ের ধান হিসেবে পরিচিত সুগন্ধি চিনি আতপ ধান চাষ করছে। চিনি আতপ ধানের বাজার মূল্য সব সময় বেশি। বর্তমানে মাঠে মাঠে ধান পাকতে শুরু করেছে। এবার ধানের রোগবালাই নেই বললে চলে। তবে মাঝে বাদামী গাছ ফড়িং (কারেন্ট পোকা) পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। কৃষকগন আগাম ব্যবস্থা নেয়ায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়েনি। গত বোরো মওসুমে কৃষক ধান চাষের খরচ ও কাটা মাড়াইয়ের মজুরি দিয়ে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। তারপরও অনেক আশা ভরসা নিয়ে নতুন উদ্যোমে অধিক পরিমাণ জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন।
উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত শিববাটি গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন,দুই একর জমিতে তিনি বিনা-১৭ জাতের ধান তিনি চাষ করেছেন। একর প্রতি তার ফলন হয়েছে প্রায় ৬০-৬৫ মণ।
পৌরসভার চকউমর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার অন্যান্য ধানের সাথে কাটারীভোগ ধান চাষ করেছেন। ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে বর্তমানে এ ধান ৮শত থেকে ৮শত ২০ টাকা দরে কেনাবেচা চলছে।
জয়জয়পুর গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। স্বর্ণা-৫ জাতের ধান একর প্রতি ৬২ মণ হারে ফলন হয়েছে। বাজারে বর্তমানে এ ধান ৬শত থেকে ৬শত ৫০টাকা দরে কেনাবেচা চলছে। বোরো মওসুমে ধানের চাষ করে তার লোকসান হয়েছে। তাই এবার ধানের মূল্য কমপক্ষে যেন ৮শত টাকা থাকে সেব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.সেলিম রেজা বলেন, আমন মওসুমে কৃষক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন। বিভিন্ন জাতের মধ্যে বিনা-১৭ এবং ব্র্রিধান-৭১,৮৭ চাষে ব্যাপক সফলতা এসেছে। এ ধানের ফলন একর প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ মণ।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উঠোন বৈঠক, হাট-বাজার সভা এবং গ্রুপ ভিত্তিক কৃষক সমাবেশ, গ্রাম কৃষক বন্ধু প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, লিফলেট বিতরণ, কৃষি প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে কৃষকদের আমন ধানের পোকামাকড় সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। ফলে এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা মাড়াই পুরোদমে শুরু হবে। সরকারি খাদ্যগুদামে প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে ক্রয় করার সিন্ধান্ত নিয়েছে। আমরা প্রকৃত কৃষকদের নামের তালিকা তৈরি করছি। এই তালিকা থেকে প্রান্তিক,মাঝারী ও বড় কৃষকের তালিকা নির্ধারণ করা হবে। তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে কি প্রক্রিয়ার ধান ক্রয় করা হবে সেব্যাপারে আগামী সোমবার সিন্ধান্ত নেয়া হবে।
স/সা
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়