বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১১ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
নওগাঁর সাপাহারে প্রতিবন্দ্বী শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানো প্রতিবন্দ্বী বিদ্যালয়টি অর্থাভাবে এখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। জানা গেছে লুৎফর রহমান নামের এলাকার এক শিক্ষিত বেকার যুবক এক সময় উপজেলা সদরে একটি কোচিং সেন্টার খুলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখাত।
২০১৭ সালের দিকে ওই যুবক লুৎফর এর মাথায় একটি ব্যতিক্রমী চিন্তা আসে এবং সে থেকে তিনি উপজেলার অবহেলিত প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন। এরপর তিনি সদরে অবস্থিত তার কোচিং সেন্টারে কোচিং বানিজ্য ছেড়ে দিয়ে ওই ভাড়া বাসায় একটি প্রতিবন্দ্বী বিদ্যালয় গড়ে তোলেন।
এরপর সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ এগিয়ে আসেন তার এ্ই মহতি উদ্যোগে। বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রতিবন্দ্বী ছেলেমেয়েদের খুজতে থাকেন তিনি। স্বল্প সময়ে বিদ্যালয়টি সরকারে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নজরে আসে। শুরু হয় বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারী প্যাটান্ট পুরনের অভিযান এবং এক সময়ে প্যাটান্টটি পূর্নও হয়। চলতে থাকে তার ভাড়াস্থ্য কোচিং সেন্টারে প্রতিবন্দ্বী বিদ্যলয়ে প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের পরিচর্জা ও লেখাপড়া শেখানোর কাজ।
শুরু থেকে বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে কোন প্রকার চার্জ বা ফি না নিয়েই ওই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে প্রতি মাসে নির্ধারিত হারে চাঁদা দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালা করে আসছেন। এমন কি তারা তাদের দেয়া চাঁদার টাকা ও সমাজের বিভিন্ন লোকের দেয়া আর্থিক সহযোগীতা হতে প্রতিদিন প্রতিবন্দ্বী শিক্ষার্থী ছেলে মেয়েদের টিফিনেরও ব্যবস্থা করে থাকেন। এর পর প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার সমস্যা হলে সাপাহার সদর ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী ও তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুল আলম শাহ্ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিষদ হতে তিনটি ব্যাটারী চালিত ভ্যান অনুদান প্রদান দেয়া হয় বিদ্যালয়টিতে।
এরপর অনেক ছেলে মেয়েদের আসা যাওয়ার সমস্যা দুর হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি সেই ভাড়াস্থ্য বাসা ছেড়ে দিয়ে আলহাজ্ব শামসুল আলম শাহ চৌধুরীর উদ্যোগে উপজেলা সদরের মহিলা কলেজ রোডে অবস্থিত মহবুবউজ্জামান পাবলিক গ্রন্থাগারে স্থানান্তরিত করা হয় ফলে বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের আর বাসা ভাড়ার টাকা গুনতে হয়না।
কিন্তু দু:খের বিষয় ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক মন্ডলী বেতন ভাতাদির আশায় বিনা বেতনে নিজের গাটের টাকা খরচ করে প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চালিয়ে আসলেও বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভ্যানগাড়ী গুলি বিকল হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সাংঘাতিক অর্থাভাবে তারা বিদ্যালয়ের নামীয় নিজস্ব জায়গায় বিদ্যালয় নির্মান ও বিদ্যালয়ে যাতায়াতকারী ভ্যানগুলি সারাতে পারছেনা।
বর্তমানে ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবন্দ্বী বিদ্যালয়টি চরম অর্থ সংকটে পড়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। উপজেলার প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের অভিভাবক ও বিনা বেতনে পাঠদানকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী মন্ডলী সমাজের অবহেলীতে ও অসহায় প্রতিবন্দ্বী ছেলে মেয়েদের যত্নে এবং তাদের লেখা পড়া শিখিয়ে দেশের কাজে লাগানোর জন্য সমাজের বিত্তবান ও সরকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়