শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০১৮
কবে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা জুটবে নওগাঁর রাণীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক মাঝি কপালে? উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত-আব্দুল্লাহ মাঝি’র ছেলে বীরমুক্তিযোদ্ধা মোবারক মাঝি ওরফে বাঘা মাঝি (১০২) শত অভাব-অনাটনের সংসার জীবনের শেষ মুহূর্তে খেয়ে না খেয়েই কোনমতে জীবন ধারন করে আসছে।
মুক্তিযোদ্ধা মোবারক মাঝি বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকা সত্বেও মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা থেকে আমি আজও বঞ্চিত। সরকারি বরাদ্দকৃত মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা চালু করার জন্য কর্তাব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়েও আজও আমার সম্মানি ভাতার ব্যবস্থা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বজ্রকন্ঠ নামক বই হাতে নিয়ে আমি নিজ গ্রাম ভবানীপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছি। তিন ছেলে এক মেয়ে থাকলেও তাদের বিবাহের পর সবাই পৃথক ভাবে ঘর-সংসার করছে। স্ত্রী মেয়ের বাড়িতে থাকার কারণে অনেক সময় আমাকেই রান্না করে খেতে হয়। ছোট ছেলে কিছুটা সহযোগিতা করলেও আমার আর্থিক অভাব-অনাটনের কারণে পিতার প্রতি সকল দ্বায়-দায়িত্ব পালন করতে পারে না তারা। বয়সের ভারে আর শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি কোন কাজ-কর্মও করতে পারি না। আমার বয়স ১০২ বছর হলেও আজও কপালে জেটেনি বয়স্ক ভাতা।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭মার্চ ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে শক্রর হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে রাণীনগর উপজেলার ভবানীপুর, ঘোষগ্রাম, কুজাইল, দূর্গাপুর, আত্রাই উপজেলার চাপড়া, সাহাগোলা গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় শত্রু সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। সাহসী ভূমিকার কারণে আমার বন্ধ-বান্ধব এবং এলাকাবাসী আমাকে ‘বাঘা মাঝি’ বলে ডাকতো। সেই থেকেই এলাকায় আমি বাঘা মাঝি হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল জলিল এবং স্বাধীন বাংলার প্রথম ডেপুটি স্পিকার মরহুম বয়তুল্লাহ আমাকে পৃথক ভাবে সনদপত্র প্রদান করেন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের তালিকার ৪০ নাম্বারে রয়েছে আমার নাম।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন জানান, বাঘা মাঝি আমাকে ও এলাকার বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নিজে গাইড দিয়ে ভারতে পাঠিয়েছিলেন। কি কারণে আজ পর্যন্ত তার কপালে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা জুটলো না তা আমাদের অজানা এবং ভাতা না পাওয়ার বিষয়টি সত্যই দুঃখজনক।
রাণীনগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এ্যাড: ইসমাইল হোসেন জানান, বাঘা মাঝিকে আমি চিনতে পারছি না। তবে তার কাছে যে সব কাগজপত্র আছে সেগুলো নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হারুন অল-রশিদ জানান, বাঘা মাঝির দুইটি সার্টিফিকেটই আমি দেখেছি। সব ঠিক আছে। কিন্তু তিনি কেন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা পাচ্ছেন না তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়