মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ৪ ১৪৩০ ০৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০১৯
নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। কৃষকেরা এখন ঘুম থেকে জেগে কাস্তে হাতে ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে। তবে পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে। শ্রমিক সংকট ও ধানের ভালো দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে এই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উপজেলা বন্যাদুর্গত এলাকা হিসেবে এ অঞ্চলের কৃষকেরা সঠিক সময়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরামর্শ, ডিলারদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমান সার ও তেল পেয়ে অনেকটা আশ্বস্ত হলেও বর্তমানে ধানের দাম ও ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে।
দিগন্ত জুড়ে যেদিকে তাকায় এখন পাকা ধানের সোনালী রঙের ঝিলিক ছটাচ্ছে। যতদূর চোখ যায় শুধু পাকা ধানের সোনালী রঙের চোখ ধাঁধানো দৃশ্য। ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলনের বুকভরা আশা করছে কৃষকরা। গত কয়েক দিন আগের ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও এখনো ভালো ফলন পাবে এই আশায় বুক বেধে আছে কৃষকরা। তবে শেষ মুহূর্তে কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
তাছাড়া ধানের বাজার নিয়েও কৃষকের মাঝে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে যে তাদের লোকসান গুনতে হবে। বাজারে নতুন ধানের আমদানি হওয়ায় টুকটাক কেনা-বেচা শুরু হয়েছে। প্রতিমণ মিনিকেট ধান ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর অন্যান্য জাতের ধানের দাম আরো কম।
উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আজাদ সরদার জানান, ইরি চাষের শুরু হতে প্রতি বিঘা জমিতে ধানের চারা বাবদ চারশ থেকে পাঁচশ টাকা, জমি চাষ করা আটশ টাকা থেকে এক হাজার টাকা, দিনমজুর বাবদ এক থেকে দেড় হাজার টাকা, পানিসেচ বাবদ দেড় থেকে দুই হাজার টাকা, সার (ইউরিয়া, পটাশ, ডেপ, জিপ, কিটনাশক) বাবদ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ও কাটা-মাড়াই বাবদ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাই ধানের বাজার ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ না থাকলে কৃষক লাভের মুখ দেখতে পারবে না।
উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, ১ বছরের পত্তন নিয়ে আমি ৪ বিঘা জমিতে ইরি ধানের চাষ করেছি। বছরের শুরুতেই এক বিঘা জমি ১৩ হাজার টাকায় পত্তন নিতে হয়েছে।
হিসাব করে দেখলাম প্রতি বিঘা জমিতে আমার প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ। ধানের ফলন হচ্ছে ১ বিঘায় ১৫/২০ মণ। এতোকম বাজারে ধান বিক্রয় করলে অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কে এম কাউছার হোসেন জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও মাজড়া পোকার কোন প্রকার আক্রমণ না হওয়ায় এবার ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হবে বলেও আমরা আশাকরছি। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য একক ও দলীয় আলোচনাসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ কৃষকদের প্রদান করা হয়েছে। এবার আমাদের যে ল্যমাত্রা আছে তা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়