ব্রেকিং:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু

রোববার   ১৩ অক্টোবর ২০২৪   আশ্বিন ২৭ ১৪৩১   ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

নওগাঁ দর্পন
সর্বশেষ:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু
১৬১০২

শিল্পাঞ্চলে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য

প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

টানা ১০ দিন শ্রমিক অসন্তোষের পর যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তায় স্বাভাবিক হচ্ছে শিল্পাঞ্চলের কর্মপরিবেশ। গতকাল শনিবার অনেক কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। গাজীপুর ও টঙ্গীতে পরিস্থিতি ছিল অনেকটা শান্ত। আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানা চালু থাকলেও আন্দোলনের জেরে প্রায় ৫০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের আশ্বাস সত্ত্বেও গতকাল সকাল থেকে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অনেক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যে কোনো মুহূর্তে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’র ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে শিল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বড় কয়েকটি শিল্প গ্রুপের শ্রমিকরা প্রতিদিন সকালে এসে কার্ড পাঞ্চ করার পর কাজ না করে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বেআইনি ধর্মঘটের কারণে মালিক ওই শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকরা কোনো মজুরি পাবেন না।

 

গতকাল দিনের শুরুতে জিরাবো-বিশমাইল সড়কে অবস্থিত পোশাক কারখানাগুলোর কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে এ অঞ্চলের দুটি কারখানায় ঝামেলা শুরু হয়। এর মধ্যে কন্টিনেন্টালের শ্রমিকরা বের হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি লুসাকার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ রাখেন। কয়েকটি কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা কাজ না করে ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস ও টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ নানা দাবি জানান।

এদিকে, শিল্পাঞ্চলের সমস্যা সমাধানে গতকাল মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে আশুলিয়ায় যান বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।

এর আগে গত শুক্রবার শিল্প মালিক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেতাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দুই দফা বৈঠকের পর বিজিএমইএ নেতারা শনিবার থেকে সব পোশাক কারখানা চালু সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সকাল থেকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং কাজ না করে কারখানা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় মালিকপক্ষ এসব কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

শিল্প পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, বিজিএমইএর ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা চালু রাখা হয়। কিন্তু বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর জোনে অবস্থিত একাধিক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কাজ না করে কারখানা থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় পরিস্থিতি গতকাল অনেকটাই ভালো ছিল বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ। তারা জানায়, শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোনো কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের মতো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

শ্রমিক নেতারা বলছেন, বিজিএমইএসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় যে আলোচনা চলছে, এতে তৃণমূলের শ্রমিক নেতাদের অংশগ্রহণ কম। যেটি সমস্যা সমাধান না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। চলমান শ্রমিক অসন্তোষে শ্রমিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণ কম বলেও দাবি করেন তারা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আলোচনায় মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক নেতাদের অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। কারণ আঞ্চলিক নেতারা সরাসরি শ্রমিকদের সঠিক বার্তাটি পৌঁছে দিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি এটিও স্বীকার করেন চলমান আন্দোলনে শ্রমিক নেতাদের ভূমিকা খুবই কম। সমস্যা সমাধানে তৃণমূলের শ্রমিক নেতাদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তৈরি পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, অন্তত ১২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা গত ১০ দিনের এই অসন্তোষের পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে শ্রমিক নেতা, বিএনপি, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীর নাম।

এদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার পার্ল গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেডের সামনের মোতায়েন রয়েছেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা। এ ছাড়া আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া গতকাল টঙ্গীতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কারখানা পাহারা দিতে দেখা গেছে।

নওগাঁ দর্পন
এই বিভাগের আরো খবর