শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৫ ১৪৩০ ১৯ রমজান ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০১৯
প্রায় ৩০ ঘণ্টা টানা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হলো জোড়া মাথার দুই বোন রাবেয়া ও রুকাইয়াকে। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এই অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দুই বোনের অবস্থা স্থিতিশীল।
এএফপি জানায়, শুক্রবার হাঙ্গেরির ৩৫ জন সার্জনকে নিয়ে রাবেয়া-রুকাইয়ার খুলি ও মস্তিষ্ক আলাদা করার অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন নিউরোসার্জন আন্দ্রেস কসোকে। দাতব্য সংস্থা অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশন (এডিপিএফ) এই দুই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
আন্দ্রেস জানান, আলাদা করার পর দুই বোনের মাথার ক্ষতস্থান নরম টিস্যুতে ঢেকে ফেলতে শুরু করেছেন তারা। এই টিস্যু বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় হাঙ্গেরিতে।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে পাবনা শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় রাবেয়া-রুকাইয়া। বিশ্বে ৫০-৬০ লাখ নবজাতকের মধ্যে এক জোড়া শিশু রাবেয়া-রুকাইয়ার মতো বিরল অসুস্থতা নিয়ে জন্ম নেয়। এ ধরনের শিশুদের অস্ত্রোপচারের পর বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাদের। পরে ঢামেকে দু'জনের জোড়া মাথায় দুই দফা এনজিওগ্রামের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের প্রধান রক্তনালি আলাদা করা হয়। এরপর গত জানুয়ারিদে প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের জন্য রাবেয়া-রুকাইয়াকে হাঙ্গেরিতে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের মাথার খুলি ও নরম টিস্যু বাড়াতে বিশেষ অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
এরপর চূড়ান্ত অস্ত্রোপচারের জন্য জুলাইয়ের শেষ দিকে দুই শিশুকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। শুক্রবার অস্ত্রোপচারের আগে অবশ্য চিকিৎসকরা বলেছিলেন, 'দুই বোনের বাঁচার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি'।
অস্ত্রোপচারের পর স্বস্তি প্রকাশ করেন রাবেয়া-রুকাইয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'ডাক্তাররা আমার দুই সন্তানকে আলাদা করেছেন। আমি নিজের চোখে তাদের দেখেছি। তারা এখন ভালো আছে।' চিকিৎসকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তার সন্তান দুটি সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে বলে তিনি আশাবাদী।
দরিদ্রদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের সুযোগ দিতে ২০০২ সালে এডিপিএফ প্রতিষ্ঠা করেন আন্দ্রেস কসোকে ও প্লাস্টিক সার্জন গার্গলে পাটাকি। এশিয়া ও আফ্রিকায় এ ধরনের ৫০০ অস্ত্রোপচার করেছেন তারা। তাদের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও রয়েছে। ২০১৭ সালে এডিপিএফে সহায়তা চান রফিকুল দম্পতি।
ডা. পাটাকি বলেছেন, রাবেয়া ও রুকাইয়ার মতো জটিল রোগী তিনি কখনও দেখেননি।
naogaondorpon.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়